অনুচ্ছেদ : অপসংস্কৃতি ও বর্তমান যুবসমাজ | অপসংস্কৃতি ও বাংলাদেশের গণমাধ্যম
অপসংস্কৃতি ও বর্তমান বাংলাদেশ যুবসমাজ
অপসংস্কৃতি হচ্ছে কোন দেশের সংস্কৃতি নিজ দেশে প্রচলন হওয়া। ধারণা করা হয় বিদেশি কোন সংস্কৃতি হলো অপসংস্কৃতি। যেমন বলা যায়, ইউরোপ অপসংস্কৃতি, পশ্চিমা অপসংস্কৃতি, ভারতীয় অপসংস্কৃতি ইত্যাদি। অপসংস্কৃতি হল ভোক্তার সম্মতি আদায়ে পুঁজিবাদী ব্যবসায়ীরা যে সংস্কৃতির মোহ তৈরি করে সেগুলোই। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, ভিন্ন দেশের রিমিক্স বা আইটেম গান, ডিজাইনার শাড়ি পরে বিয়ে করা ইত্যাদি। সংস্কৃতি মানে সুন্দরভাবে, বিচিত্রভাবে, মহৎভাবে বাঁচা অর্থাৎ বেঁচে থাকার জন্য মানুষের নৈমিত্তিক প্রচেষ্টাই সংস্কৃতি, আর অপসংস্কৃতি হলো এর বিপরীত। আত্মার মৃত্যু ঘটিয়ে অসুন্দরের উপাসনা করে, অকল্যাণের হাত ধরে বেঁচে থাকাই অপসংস্কৃতি। অপসংস্কৃতি মানুষকে কলুষিত করে এবং জীবনের সৌন্দর্যের বিকাশকে স্তব্ধ করে দিয়ে শ্রীহীনতার দিকে ঠেলে দেয়। বাংলাদেশে ১৯ শতকের বাংলায় পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে অত্যধিক বিলাসিতা ও উচ্ছ্বাসের উদ্ভব ঘটে। বাঙালি সমাজ সংস্কারক এবং চিন্তাবিদরা এই নতুন সংস্কৃতির প্রবর্তনের সাথে যে অনাচার এবং অত্যধিক আচরণকে প্রতিহত করার জন্য উকিল, এবং এটির দেওয়া উপকারী দিকগুলিকে আলিঙ্গন করে। বর্তমানে, বিশ্বায়নের বিস্তৃত নাগাল আমাদের জাতীয় অস্তিত্বকে নেতিবাচক সাংস্কৃতিক প্রভাবের সাথে মিশেছে।
বাংলাদেশে জাতীয় জীবনে অপসংস্কৃতির প্রবল লক্ষনীয়। অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যক্তিগত লোভ-লালসা চরিতার্থ করার এক উদ্ভট জোয়ার চলছে এ দেশে। বিশেষত এ দেশের তরুণ সমাজ আজ দিকভ্রান্ত, দিশেহারা। তাদের বেঁচে থাকার সাথে নীতির সম্পর্ক নেই। এই বোধ থেকেই অপসংস্কৃতির জন্ম হয়। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার প্রচেষ্টা এখন হাস্যকর দুর্নীতি এখন সামাজিকভাবে স্বীকৃত। আর এখন অনৈতিকতার সূত্রপাত হচ্ছে মানুষের অসৎ জীবিকার্জনের হাত ধরে। সৎভাবে যে জীবিকার্জন না করে তার পক্ষে অপসংস্কৃতির দাসত্ব ছাড়া উপায় নেই। প্রতিদিনের সংবাদপত্র আমাদের সামনে যে চালচিত্র তুলে ধরে, তাতে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন অতি স্পষ্ট। অশ্লীলতা, নোংরামি, খুন, ছিনতাই, প্রতারণা- সবই অপসংস্কৃতির ভিন্ন ভিন্ন নাম। আমাদের সমাজ আজ এসবেরই দাসত্ব করে চলেছে। এ আশ্রয় থেকে বিচ্যুত হলে সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যায় এবং মানুষ অপসংস্কৃতির দিকে ধাবিত হয়। শিক্ষা ও সভ্যতার অবনতি ঘটিয়ে যে সংস্কৃতি মানুষকে সুন্দর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় তাই অপসংস্কৃতি। অপসংস্কৃতি মানুষকে কলুষিত করে এবং জীবনের সৌন্দর্যবিকাশকে স্তব্ধ করে দিয়ে শ্রীহীনতার দিকে ঠেলে দেয়।
অনুচ্ছেদ : অপসংস্কৃতি ও বর্তমান যুবসমাজ | অপসংস্কৃতি ও বাংলাদেশের গণমাধ্যম
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।