রচনাঃ বিদ্যুৎ এবং আধুনিক জীবন / আধুনিক সভ্যতায় বিদ্যুতের অবদান রচনা / দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুৎ pdf
“বর্তমান সভ্যতায় বিদ্যুতের ভূমিকা বিদ্যুতের আবিষ্কার বদলে দিয়েছে জীবনযাত্রার ধরন, বিজ্ঞানের অগ্রগতি। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বিদ্যুৎ একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে থাকেন রচনা সকল শ্রেণির জন্য দেওয়া হলো এসএসসি, এইচএসসি, জেডিএস, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেণিন জন্য সহজ ভাবে লেখা হয়েছে। ” বিদ্যুৎ এবং আধুনিক জীবন / আধুনিক সভ্যতায় বিদ্যুতের অবদান/ দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুৎ / দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের ব্যবহার রচনাঃ বিদ্যুৎ এবং আধুনিক জীবন ১৫ পয়েন্ট JSC SSC HSC
‘বিদ্যুৎ এবং আধুনিক জীবন / আধুনিক সভ্যতায় বিদ্যুতের অবদান/ দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুৎ ’
ভূমিকা
বিদ্যুৎ বিজ্ঞানের একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার। বিদ্যুতের আবিষ্কার বদলে দিয়েছে জীবনযাত্রার ধরন, বিজ্ঞানের অগ্রগতি। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বিদ্যুৎ একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। সৃষ্টির আদিম প্রভাতে, যে বিদ্যুৎ চমকাতে আতঙ্কিত মানুষ গুহার ভিতর লুকিয়ে ছিল, সেই বিদ্যুৎ হাতে নিয়ে আসার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। সে হিসেবে আধুনিক সভ্যতায় বিদ্যুৎ অবদান রেখেছে বললে অত্যুক্তি হবে না। পৃথিবীকে যদি প্রাণীর সাথে তুলনা করা হয়, বিদ্যুৎ তার জীবনী শক্তি। আধুনিক বিশ্ব বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত হয়।
বিদ্যুৎ আবিষ্কার
বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে বিদ্যুৎ আবিষ্কার করেন। এবং তিনি বিদ্যুতের প্রয়োগ করেন বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন। এডিসনই প্রথম বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করে আলো তৈরি করেন। বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ইতিহাস পুরোপুরি স্পষ্ট না হলেও বৃটিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম গিলবার্টকে বলা হয় বিদ্যুতের আবিষ্কারক। তিনি ১৫৭০ সালে প্রথম বিদ্যুৎ আবিষ্কার করেন। ইতালীয় বিজ্ঞানী এ.সি. ভলতেয়ার বৈদ্যুতিক কোষ আবিষ্কার করেন এবং হেনরিক হেজ বৈদ্যুতিক তরঙ্গ আবিষ্কার করেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পানির প্রবাহকে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াটি একটি মানুষের উদ্ভাবন। কিন্তু আজকাল পেট্রোলিয়াম এমনকি সৌরশক্তি থেকেও বিদ্যুৎ আবিষ্কার করা সম্ভব। বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে বিশ্ববিখ্যাত কিছু বিজ্ঞানীদের নাম- আলেসান্দ্রো ভোল্টা, মাইকেল ফ্যারাডে, লইগি গ্যালভানি ও টমাস আলভা এডিসন। তাঁরা প্রত্যেকেই বিদ্যুতের বিভিন্ন দিক উদ্ভাবন করেছেন। ১৮৭৮ সালে মার্কিন বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করে সভ্যতার অগ্রগতিতে অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করেন।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ
আবিষ্কারের পর থেকেই খুব দ্রুত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যুৎ। এর ক্রমধারায় এক সময় বাংলাদেশেও শুরু হয় বিদ্যুতের ব্যবহার। ১৯০১ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ জ্বলে উঠে ঢাকার আহসান মঞ্জিলে। এরপর থেকে ব্যাপকভাবে শুরু হয় সর্বক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, চিকিৎসা, কৃষি, সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রের মূল চালিকাশক্তি এখন বিদ্যুৎ। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাইতে অবস্থিত। যেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে।
দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের ভূমিকা
বিদ্যুৎ ছাড়া আধুনিক জীবন কল্পনা করা যয় না। বর্তমান সভ্যতা বিদ্যুতের মাধ্যমে উন্নত হয়েছে। বিদ্যুতের সাহায্যে মানুষ তাদের কাজের সুবিধা করতে পেরেছে। বিদ্যুতের রূপান্তর থেকে চুম্বকত্ব, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রের উদ্ভাবন দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করেছে। বৈদ্যুতিক বাতি, পাখা, রেডিও, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার ইত্যাদি বিদ্যুতের সাহায্যে চলে। শহর-গ্রাম, অফিস-আদালত, গবেষণাগারে বিদ্যুতের ব্যবহার নেই। চিকিৎসাক্ষেত্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিল্পে বিদ্যুতের অনুপস্থিতি অকল্পনীয়। এক কথায় বিদ্যুৎ অনেক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গৃহস্থালির কাজের জন্য বিদ্যুৎ
গরম থেকে ঠাণ্ডা করার জন্য বৈদ্যুতিক পাখা, এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা হয়। সবজি, ফল, মাংস, মাছ ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বৈদ্যুতিক বাতি আমাদের আধুনিক জীবনের ছোঁয়া দিয়েছে। বৈদ্যুতিক আয়রন দিয়ে কাপড় পরিষ্কার করা হয়। এছাড়াও প্রতিদিনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন ওয়াশিং মেশিন, স্যান্ডউইচ মেশিন, টোস্টার, ব্লেন্ডার ইত্যাদি রয়েছে।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ
আবিষ্কারের পর থেকেই খুব দ্রুত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যুৎ। এর ক্রমধারায় এক সময় বাংলাদেশেও শুরু হয় বিদ্যুতের ব্যবহার। ১৯০১ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ জ্বলে উঠে ঢাকার আহসান মঞ্জিলে। এরপর থেকে ব্যাপকভাবে শুরু হয় সতের ব্যবহার। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, চিকিৎসা, কৃষি, সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রের মূল চালিকাশক্তি এখন বিদ্যুৎ। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাইতে অবস্থিত। যেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে।
বর্তমানে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রথম প্রস্তাব করা হয় ১৯৬১ সালে পাকিস্তান আমলে। এ সময় তৎকালীন সরকার ২৫৩ দশমিক ৯০ একর জমি বরাদ্দ দেয়। ঐ সরকার বেশকিছু পর্যালোচনার ভিত্তিতে ১৯৬৩ সালে পাবনার রূপপুরে ৭০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয়। ১৯৬৪ এবং ১৯৬৬ সালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিষয়ে আলোচনা হয় কানাডিয়ান সরকারের সাথে যা পরবর্তী কয়েক বছর সুইডিশ সরকার এবং নরওয়েজিয়ান সরকারের সাথেও আলোচনা চলতে থাকে, কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের বাস্তব কোন অগ্রগতি হয়নি। ১৯৬৪ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য সকল যন্ত্রপাতি বাংলাদেশের উদ্দেশে জাহাজে করে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই জাহাজ পাকিস্তান (তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান) তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে তা চট্টগ্রাম বন্দরে না এনে করাচিতে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিষয়ে আলোচনা হলেও কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ ২০০৯ সালের বাংলাদেশ সরকার পুনরায় রাশিয়ার সাথে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের আলোচনা শুরু করে এবং একই বছরের ১৩ই ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক বা MOU (Memorendum of Understanding) স্বাক্ষরিত হয়। তবে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকারের উদ্যোগে ২০১০ সালের ২১ মে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ও রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বিষয়ক একটি Framework আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় মস্কোতে। যার ফলশ্রুতিতে ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে পাবনার রূপপুরে দুই হাজার চারশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার জন্য রাশিয়ার এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি বাস্তবায়নের সময়কাল ধরা হয়েছে সাত বছর। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদনে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদকাল হবে ষাট বছর ধরে।
বিদ্যুৎ ও আধুনিক জীবন
আধুনিক সভ্য জীবনের সাথে বিদ্যুতের একটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া আধুনিক জীবন চলতে পারে না। কাজেই আধুনিক প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি এখন মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। আর বিদ্যুতের সাহায্য ছাড়া এসব যন্ত্রপাতি পুরোপুরি অচল। বিদ্যুতের আগমনের ফলে জীবনের সবক্ষেত্রে পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আধুনিক জীবনে মানুষকে চরম সার্থকতা এনে দিয়েছে বিদ্যুৎ। বর্তমানে মানুষ এতটাই বিদ্যুৎ-নির্ভর যে বিদ্যুতের ব্যবহার ছাড়া জীবনের সমস্ত গতি মুহূর্তেই থেমে যায়।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ
যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ নতুন গতি যোগ করেছে। বিদ্যুতের কল্যাণে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের সমস্ত দূরত্ব দূর করে দেওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় সংবাদপত্র। পুরো পুথিবীর খবরাখবর চলে আসে হাতের মুঠোয়। তাছাড়া টেলিফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহূর্তেই যোগাযোগ করা যায় বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সাথে। দ্রুতগামী বৈদ্যুতিক ট্রেন পরিবহন ব্যবস্থায় নিয়ে এসেছে চরম উৎকর্ষতা। বিদ্যুতের সাহায্যেই গড়ে উঠেছে আধুনিক বিমান ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প। বন্দর ও স্টেশনে ভারী মালামাল উঠানো ও নামানোর জন্য যে ‘কপিকল’ ব্যবহার করা হয় তারও শক্তির উৎস হচ্ছে বিদ্যুৎ।
উৎপাদন ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ
বিদ্যুতের কল্যাণে বর্তমান উৎপাদন ব্যবস্থা সাফল্যের চরম শিখরে উঠতে শিখেছে। বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলকারখানাগুলো এখন দ্রুত উৎপাদনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। পানির জন্য এখন কৃষকদের প্রকৃতির দয়ার আশায় বসে থাকতে হয় না। বৃষ্টি না হলেও তারা তাদের কৃষিক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক মেশিন ব্যবহার করে পানি সেচ দিতে পারে। এর ফলে তাদের উৎপাদনের পরিমাণও আগের চেয়ে অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি ব্যবস্থায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। বর্তমান পৃথিবীতে উৎপাদনের ব্যাপক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। কারণ প্রযুক্তিগত বিশাল বিশাল যন্ত্রগুলোকে সে মানুষের দাসে পরিণত করেছে।
জ্বালানি হিসেবে বিদ্যুৎ
বিদ্যুতের নানাবিধ ব্যবহারের কারণে আধুনিক জীবন পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি সহজ ও সহনশীল। বর্তমানে জ্বালানি হিসেবেও বিদ্যুতের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। আধুনিক সমাজে এখন কাঠ, তেল ও গ্যাসের পাশাপাশি বিদ্যুতও ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন কাজের জ্বালানি হিসেবে। মানুষ এখন বিদ্যুতের সাহায্যে হিটার ও কুকারে রান্না করে। বিভিন্ন যানবাহনে এখন তেল ও গ্যাসের পরিবর্তে বিদ্যুতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি চালানো হচ্ছে বিদ্যুতের সাহবীর জ্বালানি সম্ভাবনা সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও বিদ্যুৎ
আধুনিক যুগকে বলা হয়ে থাকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতার যুগ। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার পেছনেও রয়েছে বিদ্যুতের বিশ্বস্ত হাত। বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার কম্পিউটারের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে বিদ্যুৎ। সব ধরণের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য দরকার বিদ্যুৎ। মহাকাশ অভিযান ও মহাকাশ বিজয়ের সাফল্যের মূলেও বিদ্যুতের অবদান রয়েছে। নির্ভুল হিসাব, দিকনির্ণয়, মহাকাশের ছবি পৃথিবীতে প্রেরণ ইত্যাদি কাজের জন্য ব্যবহার করা হয় নানা ধরণের প্রযুক্তি। সেই প্রযুক্তি আবার বিদ্যুৎ ছাড়া চলতেই পারে না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে বিদ্যুতকে সর্বদা সাথে নিয়ে। বিদ্যুতকে বাদ দিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব না। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা ‘নাসা’ সম্পূর্ণভাবে বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি নির্ভর।
বিনোদনে বিদ্যুৎ
রেডিও-টেলিভিশন, টেপ রেকর্ডার, ভিসিডি-ডিভিডি ইত্যাদি বিদ্যুতের সাহায্যে চলে। তাছাড়া বিনোদন পার্কে ব্যবহৃত অনেক রাইড বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। তাছাড়া অনেক খেলনা বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে এসি বিদ্যুত চার্জ করে সংরক্ষণ করা হয় এবং ডিসি বিদ্যুৎ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
অফিস-আদালতে বিদ্যুৎ
ফ্যাক্স, ই-মেইল, টেলেক্স, টেলিগ্রাফ ইত্যাদি প্রযুক্তিতে বিদ্যুতের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। বিজ্ঞানের আশ্চর্যজনক আবিষ্কার কম্পিউটারগুলিকেও চালনার জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন। চলমান জেনারেটরে স্থির শক্তি হিসেবেও বিদ্যুৎ সঞ্চিত থাকে।
শিল্পে বিদ্যুৎ
স্পিনিং মিল, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, সংবাদপত্র অফিস ইত্যাদিতে বিদ্যুতের গুরুত্ব অপরিসীম। কলকারখানার স্থবিরতা দূর করে শিল্প উৎপাদন গতিশীল করার মূলে রয়েছে বিদ্যুৎ। শ্রম শোষণ যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ : বৈদ্যুতিক ট্রেন, ট্রাম, কনকর্ড বিমান থেকে শুরু করে যোগাযোগের অনেক বামন বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত হয়। বিদ্যুৎ ডালিফোন, ফ্যাক্স, টেলেক্স, ইন্টারনেট বিশ্বের তথ্যপ্রবাহ সচল রেখেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজতর ও দ্রুততর করেছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের প্রয়োগেই বিশ্ব হাতের মুঠোয় এসে গেছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিদ্যুৎ
সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে উন্নয়ন ঘটেছে চিকিৎসাক্ষেত্রের। আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি, অঙ্গ-রে, সিটি স্ক্যান প্রভৃতি যান্ত্রিক প্রকৌশলে বিদ্যুতের ব্যবহার অপরিহার্য। মানবদেহের জটিল রোগ-ব্যাধি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রয়োগে চিকিৎসাবিজ্ঞান অনেক এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
মুদ্রণশিল্পে বিদ্যুৎ
মুদ্রণ যন্ত্রের আবিষ্কার মানুষের সভ্যতার ইতিহাসের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আর বিদ্যুতের স্পর্শে মুদ্রণযন্ত্র পাত করেছে অভূতপূর্ব গতিময়তা। পাঠ্যপুস্তক, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন গ্রন্থ, বিনোদন পুস্তিকা, সংবাদপত্র কিংবা যেকোনো ধরনের পুস্তক প্রকাশনায় বিদ্যুতের অবদানকে কোনোক্রমেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
মানুষের শ্রম লাঘবে বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ মানুষের শারীরিক শ্রমকে লাগব করে দিয়েছে। যে ঢাকা শত মানুষের ঘাম ঝরিয়েও ঘোরানো যেতনা, বিদ্যুতের যাদুস্পর্শে তা দ্রুতগতিতে অবিরাম ঘুরতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যুৎ-নির্ভর যান্ত্রিক-কৌশল অবকাঠামো নির্মাণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ও মানুষের শ্রমকে লাঘব করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ কেবল শ্রমকে বাঁচায় নি, বাঁচিয়েছে সময়কেও।
সভ্যতার বিকাশে বিদ্যুৎ
বিদ্যুতের আবিষ্কার ও এর ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সভ্যতার আমূল পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। বিজ্ঞানের যে কয়টি আবিষ্কার মানুষের জন্য অভাবিত কল্যাণ বয়ে এনেছে, তার মধ্যে বিদ্যুৎ প্রধানতম। বিদ্যুতের কল্যাণে দুর্বার গতি আর অফুরন্ত সম্ভাবনা এসেছে মানুষের সামনে। এক সেকেন্ডের জন্যও এখন সারা পৃথিবীতে বিদ্যুতের অনুপস্থিতি কল্পনা করা যায় না ।
বিদ্যুতের ক্ষতিকর দিক
প্রত্যেক উপকারী উপাদানেরই কিছু ক্ষতিকর দিক থাকে। বিদ্যুৎও তার নেতিবাচক ভূমিকা থেকে মুক্ত নয়। এক মুহূর্তের বৈদ্যুতিক শকে মানুষের মূল্যবান জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডেরও সূচনা হয়। তাছাড়া বিদ্যুতের কল্যাণে মানুষের শারীরিক পরিশ্রম লাঘব হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে অলসতা ভর করে।
উপসংহার
বিদ্যুতের আবিষ্কারক বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে বলেন, “Electricity is the soul of civilization", আধুনিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের পদচারণা রয়েছে। সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে বাড়ছে বিদ্যুতের ব্যবহার। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, শিল্প-কারখানার বিকাশ, কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়নে বিদ্যুতের অবদান অনস্বীকার্য। বর্তমান সভ্যতায় বিদ্যুতের বিকল্প নেই। মহামূল্যবান বিদ্যুৎ শক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে বর্তমান সভ্যতা এগিয়ে যাচ্ছে আরো উন্নত অবস্থানের দিকে।
কৌণিক বার্তা.কম কে সাহায্য করোঃ
আপনি চাইলে আমাদের সাহায্য করতে পারেন আপনার পছন্দের কিছু লিখে,ধন্যবাদ। |
বাংলা রচনার সম্পূর্ণ তালিকা
সবগুলো অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ ও ঔ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ ষ স হ ড় ঢ় #
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।