মহান বিজয় দিবস / ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস

বিজ্ঞাপন  Daraz 11.11 The Biggest Sale of The Year is coming Get up to 80% OFF

বিজয় দিবস

মহান বিজয় দিবস / ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস


১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৩১ মিনিট বিশ্বের বুকে রচিত হলো নতুন ইতিহাস। পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করল আরেকটি দেশ, যার নাম বর্তমানে বাংলাদেশ। বিজয় অর্থাৎ কোনো কিছুতে জয় লাভ করা। বর্হিশক্তির হাত থেকে কোনো দেশে স্বাধীনতা লাভ করার যে দিনে। সে দিনটিকে ঐ দেশের বিজয় দিবস হিসাবে মানা হয়ে থাকে। প্রতিটি দেশ এবং জাতির জীবনেই বিজয় দিবস এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল দিন। তাদের থেকে বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবছর বাংলাদেশ ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখ বাঙালির জাতীয় জীবনে অপরিসীম আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে বিজয় দিবস। বিজয় দিবসের এই দিনটি বাঙালি জাতিসত্তার আত্মমর্যাদা, বীরত্ব এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান বাহিনীর কাছ থেকে বাংলাদেশ মুক্ত পাই।

১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পরাজয় মেনে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের দলিলে সই করেন পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমাণ্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজি। বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন মিত্রবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।

দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয় বাঙালি জাতি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে শুরু হয় বিজয়ের মিছিল। আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে পুরো বাঙালি জাতি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে বাঙালিরা তাদের আকাক্সক্ষার রূপদানের স্বপ্ন দেখলেও পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের শোষণের কারণে তা অবাস্তবই থেকে যায়। পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার নির্বাচিত সরকারের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা না দিয়ে বরং দমন-পীড়নের পথ বেছে নেয়। এরই প্রতিবাদে বাঙালির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ ১৯৭১ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বাঙালির আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন।

২৫ মার্চ রাতেই মেজর জেনারেল টিক্কা খানের নির্দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজধানীর ঘুমন্ত নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালায়। বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা, রাজারবাগ পুলিশ লাইন প্রভৃতি স্থানে পাক সেনারা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। এরপর ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-শিক্ষক, শিল্পী-সাহিত্যিক, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এদেশের সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। অবশেষে ৭১ এর ১৬ ডিসেম্বরে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যার জন্য আপামর জনসাধারণ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করেছিল। ঐদিন রেসকোর্স ময়দানে পাকসেনারা মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এবং সূচনা ঘটে বাংলাদেশের মহান বিজয়, জন্ম হয় একটি স্বাধীন দেশের, যার নাম বাংলাদেশ।

১৬ ডিসেম্বর ২০২১ বিজয় লাভের ৫০ বছর। বাঙালি জাতির গৌরবের দিন, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে আজ সারাদেশে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা জানানো হবে। ১৬ কোটি বাঙালি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করবে দেশের বীর সন্তানদের। যাদের ৯ মাসের সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আমাদের লাল সবুজের পতাকা।মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভোর থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলা ও ইউনিয়নে পালিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি।

দেশের সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও পরিবেশ এবং ৫০ বছরের অগ্রগতি তুলে ধরতে দুই দিনের কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। উদ্বোধনী দিনের অনুষ্ঠানে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৬টি দেশের সৈন্যরা মার্চ পাস্টে অংশ নেবে। দুই দিনব্যাপী আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেবেন। প্রতি বছর সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।

১৯৭১ ☞ স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

১৯৭২ ☞ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম সংবিধান প্রকাশিত হয়।

১৯৭২ ☞ ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গ্যাজেটের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় খেতাব ঘোষণা করা হয়।

১৯৯৬ ☞ ২৫ বছর পূর্তি উৎসব করা হয়।

২০১৩ ☞ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ২৭,১১৭ জন স্বেচ্ছাসেবী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার লাল এবং সবুজ ব্লক নিয়ে একত্রে জড়ো হয়ে বিশ্বের বৃহত্তম মানব পতাকার নতুন বিশ্ব রেকর্ড করে। 

২০২১ ☞ ৫০ বছর পূর্তি উৎসব পালন করা হয়।

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস

বিজয় দিবস বাংলাদেশে বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র পালন করা হয়।প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারীভাবে এ দিনটিতেছুটি ঘোষণা করা হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে।এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ভারতেও এই দিনটি বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।

এ উপলক্ষে প্রতি বছর বাংলাদেশে দিবসটি যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে পালিত হয় ১৬ ডিসেম্বর ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা ঘটে। জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা যোগ দেন। কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন দেশটির প্রধান রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী। এই কুচকাওয়াজ দেখার জন্য প্রচুরসংখ্যক মানুষ জড়ো হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে থাকেন।


বাংলা প্রবন্ধ রচনা তালিকা


সবগুলো #

এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
মন্তব্যগুলো দেখান
মন্তব্যগুলো যোগ করুণ

আপনার মূল মান মতামতটি আমাদের জানান। আমি শালীন ভাষা ব্যাবহার করবো এবং অশ্লীল ভাষা ব্যাবহার থেকে বিরত থাকবো। কৌণিক বার্তা.কম আপনার আইপি অ্যাড্রেস ব্লকের ক্ষমতা রাখে।

comment url
বিজ্ঞাপন  Daraz 11.11 The Biggest Sale of The Year is coming Get up to 80% OFF