রচনাঃ স্বাধীনতা দিবস | ২৬শে মার্চ রচনা | shadhinota dibosh

 

রচনাঃ স্বাধীনতা দিবস | ২৬শে মার্চ রচনা | shadhinota dibosh
স্বাধীনতা দিবস | ২৬শে মার্চ

স্বাধীনতা দিবস | ২৬শে মার্চ রচনা

বিষয়ঃ স্বাধীনতা দিবস রচনা | মহান স্বাধীনতা দিবস | স্বাধীনতা দিবস ২০০ শব্দ | স্বাধীনতা দিবস ১০০ শব্দ | স্বাধীনতা দিবস ৫ম শ্রেণি | ২৬ শে মার্চ রচনা | shadhinota dibosh | shadhinota dibosh Rochona


বিষয়ঃ এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার ৫ম শ্রেণি ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেণি | JSC SSC HSC Class 4 5 6 7 8 9 10

ভূমিকা

স্বাধীনতা মানে ষ-অধীন। অর্থাৎ নিজের অধীন। অন্যের অধীন থেকে মুক্ত হয়ে নিজের মতো জীবনযাপন করার নামই হচ্ছে স্বাধীনতা। স্বাধীনতা আমাদের জন্মগত অধিকার। এই অধিকার যখন অন্য মানুষ হরণ করতে চায়, মানুষের আশা-আকাতকা পদদলিত করে যন্ত্রসাধ ধুলায় লুণ্ঠিত করতে চায়, অসহায় দুর্বল মানুষকে পরাধীনতা দুঃশাসনের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখতে চায় তখন দুর্বল অসহায় মানুষ পরাধীনতার দুঃশাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এক হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর আমাদের এমনই একটি দিন ২৬শে মার্চ বা স্বাধীনতা দিবস। বিশ্বের প্রতিটি মাধীন দেশের জাতীয় জীবনেই স্বাধীনতা দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।

স্বাধীনতা দিবস

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুখের রহমান। বহু ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানি শাসকদের হাতে থেকে স্বাধীন পেয়েছি। ২৬ শে মার্চ দিনটিতে আমরা পাকিস্তানিদের হাত থেকে আমাদের দেশকে স্বাধীন করতে সকল নারী-পুরুষ এর ত্যাগ ও সাহসিকতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় । এই দিনে আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই সেই সব মুক্তিযোদ্ধাদের যারা মাতৃভূমির জন্য জীবন দিয়েছেন। আমরা শ্রদ্ধা জানাই তাদের প্রতি যারা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি স্বাধীন জাতি পরিচয় এনে দিয়েছে। এই ত্যাগ ও সাহসিকতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় এই মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন।

আমাদের স্বাধীনতা দিবস

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। এর পূর্বে আমরা পাকিস্তানিদের সাথে একত্রে ছিলাম। বহু ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণের হাত থেকে মুক্ত হয়েছি। তাই ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবস আমাদের চেতনাকে উজ্জীবিত করে। তাই আমাদের জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। কবির ভাষায়-

"স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়? দসত্ব-শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে,কে পরিবে পায়।"

স্বাধীনতা দিবসের ঘটনা

১৭৫৭ সালে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার মর্মান্তিক পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। এরপর শুরু হয় ইংরেজদের অত্যাচার, অবিচার আর শোষণ। প্রায় দু'শ বছর নিপীড়নের পর বহু বিক্ষোভ আর সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দু'টি রাষ্ট্র গঠিত হয়। বাংলাদেশ পাকিস্তানের পূর্বাংশে অবস্থিত বলে এর নাম দেওয়া হয় পূর্ব পাকিস্তান। স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হলো সত্যি কিন্তু বাঙালিদের ভাগ্য থেকে অত্যাচার আর শোষণের অবসান হলো না। পশ্চিমা শাসকগণ তাদের লোভ-লালসা আর আধিপত্য বিস্তারের জন্য বাঙালিদের উপর নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে। বঞ্চিত করে বাঙালিদের ন্যায্য অধিকার থেকে। কিন্তু তাদের এই অত্যাচার বাঙালিদের মনে ক্ষোভের সম্ভার করে। তাই তারা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, শিক্ষা, সংস্কৃতি, শাসনতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যাধিকার আদায়ের বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে তোলে।

সর্বশেষ আন্দোলন ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও পাকিস্তানি শাসকগণ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা দিতে গড়িমসি করে এবং গোপনে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে থাকে। বাঙালি জাতির যাধিকার আদায়ের আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে। তাদের পোষ্য সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে ঘুমন্ত বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সারাদেশে হত্যা করে লাখ লাখ মানুষকে। এই নারকীয় হত্যার প্রতিবাদে বাঙালি ডাক দেয় স্বাধীনতা সংগ্রামের। সুদীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলার স্বাধীনতা। বাংলার আকাশে উত্তোলিত হলো স্বাধীন বাংলার বিজয়ী পতাকা। মূলত ২৬শে মার্চই বাঙালির চৈতন্যে স্থাপিত হয়েছিল স্বাধীনতার অমর স্মারক। তাই ২৬শে মার্চে আমরা যাধীনতা দিবস পালন করি।

স্বাধীনতা দিবসে করণীয়

বাঙালির জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবস স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক। বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে সারাদেশে পালন করা হয় এই দিনটি। এই দিনটি সরকারি ছুটির দিন। তোপধ্বনি, সামরিক কুচকাওয়াজ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, খেলাধুলা, মেলা, সভা-সমিতি, আলোচনাসভা, বিচিত্রানুষ্ঠান ইত্যাদির মধ্য দিয়ে এই দিনটির সূচনা করা হয়। সর্বোপরি স্বাধীনতা দিবসটিকে আমাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা উচিত। সেই সাথে এর শিক্ষা আমাদের জাতীয় জীবনে গ্রহণ করা সমীচীন।

উপসংহার

স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য কেবল আনন্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এ দিবস জাতীয় জীবনে সংগ্রামী চেতনার উৎসরূপে কাজ করে। এই দিন জাতি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নতুন করে শপথ নেয়। এই দিন আমাদেরকে স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে। তাই কবির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরাও বলতে চাই-

"বাংলার স্বাধীনতা প্রায়োগিক বীরত্ব, নয় হীনতা বাঙালির স্বাধীনচেতা মনোভাব প্রতিবাদ অন্যায়ের বিরুদ্ধে জানানো স্বভাব।"



এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url