বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সাথে গাঁথা ,নয়নের অংশ যেমন নয়নের পাতা : ভাব-সম্প্রসারণ | HSC SSC | PDF

বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সাথে গাঁথা ,নয়নের অংশ যেমন নয়নের পাতা ভাব-সম্প্রসারণ

চোখকে নিরোগ সুস্থ রাখতে চোখের পাতার যেমন বিকল্প নেই। তেমনি কাজকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে বিশ্রামের প্রয়োজন। কারণ বিশ্রামে শরীরে যে উদ্যম আসে, তা দিয়েই কাজ সম্পন্ন করতে হয়।

বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সাথে গাঁথা ,নয়নের অংশ যেমন নয়নের পাতা

বাংলা ২য় - ভাবসম্প্রসারণ (Vab Somprosaron) বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সাথে গাঁথা ,নয়নের অংশ যেমন নয়নের পাতা।

মূলভাব:

মানুষ শ্রম দিয়ে জীবিকার্জন করে। তার পরিশ্রমের পাশাপাশি বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তাও অনদীকার্য।

সম্প্রসারিত ভাব:

জীবনের জন্য কাজ অর্থাৎ শ্রম যেমন অপরিহার্য, তেমনি বিশ্রামও অপরিহার্য। পরিশ্রমের পর বিশ্রাম না নিলে পরে আর কাজের শক্তি পাওয়া যায় না। তাই পরিশ্রম ও বিশ্রাম একই সূত্রে প্রথিত। বিশ্রাম ও কাজ একে অন্যের প্রতিপক্ষ নয় বরং একটি অপরটির পরিপূরক। একটির জন্যই অপরটির প্রয়োজন। পরিশ্রমের পর শ্রান্ত ও ক্লান্ত দেহকে সুস্থ করে হৃত উদ্যম ফিরিয়ে আনার জন্য যেমন বিশ্রামের প্রয়োজন, তেমনি বিশ্রামের পর দেহের কর্মস্পৃহাকে সচল রাখার জন্য নিয়মিত শ্রমের প্রয়োজন। দেহের পক্ষে একটানা পরিশ্রম যেমন ক্ষতিকর, তেমনি একটানা বিশ্রামও সুখকর নয়। একটানা বিশ্রাম জীবনকে করে তোলে অলস, অচল, কর্মবিমুখ ও মূল্যহীন। পক্ষান্তরে, একটানা পরিশ্রমের ফলে দেহ-মনে নেমে আসে অবসাদ এবং দেহের কর্মক্ষমতা হয় লুপ্ত। চোখের পাতা যেমন: চোখের জন্য অপরিহার্য অঙ্গ, বিশ্রামও পরিশ্রমের জন্য অপরিহার্য। 

মানুষ দুটি সম্পদ জন্মসূত্রে লাভ করেছে। একটি সম্পদ হল কাজ (শ্রম) এবং অপরটি বিশ্রম। যখন থেকে সে কাজ করার অধিকার পেয়েছে তখন স্বাভাবিকভাবেই বিশ্রাম লাভের সুবিধাও অর্জন করেছে। বিশ্রামের প্রকৃত আনন্দ শুধু পরিশ্রমী ব্যক্তিই অনুভব করতে পারে। অলস ও হতবল মানুষ শ্রম ও বিশ্রাম কোনোটিরই আনন্দ বুঝতে পারে না। সুতরাং, বিশ্রাম ব্যতীত শ্রমের অথবা শ্রম ব্যতীত বিশ্রামের কোনো সার্থকতা নেই।

মন্তব্য:

বিশ্রাম ও পরিশ্রম একে অপরের পরিপুরক। যেমন দিন ও রাত। জীবনে উন্নতির জন্যে পরিশ্রম করা প্রয়োজন। তবে যান্ত্রিকভাবে একটানা কাজও করা উচিত নয়।

এই ভাবসম্প্রসারণটি বিভিন্ন বই থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে

বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সাথে গাঁথা ,নয়নের অংশ যেমন নয়নের পাতা

ভাব-সম্প্রসারণ : কর্মময় এ পৃথিবী। এখানে প্রতিটি প্রাণীই শ্রম দিয়ে জীবন বাঁচিয়ে রাখে। পৃথিবীর মানুষ আপন শ্রমের বিনিময়েই পৃথিবীকে নতুন রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে। আজকের নতুন সভ্যতা মানুষের বুদ্ধি, কৌশল ও শ্রমের ফসল। কিন্তু শ্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে দেখা যায় না। জীবনে যেমন কর্মের প্রয়োজন আছে তেমনি আছে বিশ্রামের। চোখের পাতা যেমন চোখের অংশ, বিশ্রামও তেমনি কাজের অংশ। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে কর্মের জন্যে দিন ও বিশ্রামের জন্য রাত দান করেছেন। পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। কাজেই দেশ, দশ ও বিশ্বকে উন্নত করার জন্যে কঠোর পরিশ্রম করা আশু দরকার। আজ বিজ্ঞানের চরম ও পরম উন্নতির যুগে জাপানিরা পরিশ্রমী হবার কারণেই টেকনোলজির দিক থেকে আমেরিকা ও রাশিয়ারকে পেছনে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু তাদের পরিমিতবিশ্রাম করার প্রবণতা না থাকায় আজ তাঁরা অনিদ্রায় ভুগছে। এমন অনিদ্রা মানুষকে এক সময় অসুস্থ করে তুলতে পারে। পরে স্লিপিং টেবলেট খেয়েও ঘুম আনতে পারে না। উন্নত দেশগুলো এ রোগে ভুগছে। তাই ইসলামও বলে “তোমাদের উচিত দৈনিক ছয় ঘণ্টা ঘুম দেওয়া” পাখি, জীব-জানোয়ার, কীট-পতঙ্গ খাদ্যের অন্বেষণে বাসা থেকে বের হয় ও পেট ভরে গেলে পুনরায় ফিরে আসে বাসায় বিশ্রাম নিতে। চোখের পাতার অপরিহার্যতা চোখের জন্যে; নচেৎ চোখের পাতাহীন চোখের কথা কেউ কি কখনও ভাবতে পারে? অতএব চোখের স্বাভাবিকতার জন্যেই চোখের পাতার প্রয়োজন। চোখ এবং চোখের পাতা-এ দুই প্রত্যঙ্গ যেমন অপরিহার্য- তেমনি শ্রম এবং বিশ্রাম-এ দুটিও অপরিহার্য। বিশ্রামে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়, মানুষ নবশক্তি লাভ করে, মন সতেজ ও প্রফুল্ল হয়। তাই শুধু কর্ম নয়, বিশ্রাম বা ছুটিও জীবনের জন্য অত্যাবশ্যক। মানুষের জীবনে কর্মশক্তি বাড়াবার জন্যই ছুটির দরকার।

বিঃদ্রঃ বাংলাদেশর সকল শিক্ষা বিষয়ের খবর তথ্য জানতে চোখ রাখুন কৌণিক বার্তা ফেসবুক পেজেঃ-


ভাবসস্প্রসারণের সম্পূর্ণ তালিকা

এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url