ভাবসম্প্রসারণ - স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন | SSC HSC JSC 2023 PDF

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন
কৌণিক বার্তা ওয়েবসাইটে বিভিন্ন শ্রেণীর বিভিন্ন পেশার শিক্ষার্থীদের পাঠ্য পুস্তকের বাইরেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষামূলক বিষয়ের উপর আলোচনা করা হয়ে থাকে। ষষ্ঠ থেকে থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের একটি আবশ্যিক বিষয় হচ্ছে বাংলা দ্বিতীয় পত্র। বাংলা দ্বিতীয় পত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভাব সম্প্রসারণ। আমরা প্রতিদিনই এখানে বিভিন্ন ভাব সম্প্রসারণ এর ওপর আলোচনা করে থাকি।
ভাবসম্প্রসারণ  স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম ১১ ও ১২ শ্রেণীর জন্য কাযকারি । ভাবসম্প্রসারণ  SSC HSC JSC বাংলা ২য় পত্রের পরিক্ষায় সহজ ভাবে লিখে ভালো নাম্বার পাবেন সেই ভাবে লেখা হয়েছে।

  স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন

মূলভাব:

স্বাধীনতা অর্থ ভৌগোলিক স্বাধিকার নয়। স্বাধীনতার অর্থ হলো সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও অর্থনৈতিক মুক্তি। মানুষের মৌলিক চাহিদা ও অধিকার পূরণ না হলে স্বাধীনতা হয়ে পড়ে অর্থহীন। স্বাধীনতা জাতীয়জীবনের অমূল্য সম্পদ। স্বাধীনতা অর্জন করা সহজ নয়। স্বেচ্ছায় কেউ স্বাধীনতা পায় না ।

সম্প্রসারিত ভাব:

স্বাধীনতা অর্জন করা কোনো পরাধীন জাতির পক্ষে অত্যন্ত কঠিন কাজ। মানবজীবনে স্বাধীনতার চেয়ে পরম আরাধ্য বস্তু আর কিছু নেই । স্বাধীনতাহীনতায় কোনো মানুষ বেচে থাকতে চায় না। পরাধীনতায় মানবতার অপমান হয়। মানুষ্যত্ব হয় কলুষিত । তাই যুগে যুগে মানুষ স্বাধীনতার জন্য অকুণ্ঠচিত্তে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। পরাধীন, অত্যাচারিত জাতি স্বীয় মর্যাদাকে পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্তিলাভ করে থাকে । কিন্তু এ মুক্তি অর্জনই শেষ কথা না। একে সমুন্নত রাখাই  মহান দায়িত্ব ও কর্তব্য । স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের পুনর্গঠন , উন্নয়ন ও বহিঃশত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকা একান্ত প্রয়োজন। স্বাধীনতা লাভের পর পরাধীনতার মতো জীবনযাপন না করে কর্মঠ , বলিষ্ঠ ও আত্মপ্রত্যয়ী জাতি হিসেবে স্বাধীনতার ফসল ঘরে ঘরে পৌছে দিয়ে স্বদেশের মান ও মর্যাদাকে অক্ষুন্ন রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। তবেই অজিত স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব হবে। নতুবা বহু প্রত্যশিত স্বাধীনতার মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়বে।

আপন কর্মপ্রেরণা, ‍চিন্তাধারা ও শৃঙ্খলাবোধের দ্বারাই প্রমাণ রতে হবে কাক্ষিত স্বাধীনতার মহাত্ম্য  ও মর্যাদা । কিন্তু এটি স্বাধীনতা অর্জনের চেয়েও কঠিন । ভৌগোলিক স্বাধীনতার পাশাপাশি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি না হলে স্বাধীনতার লক্ষ্য হয় অর্থহীন । অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন সহজ নয়। কঠোর শ্রম সাধনার মাধ্যমে একটি জাতি যখন  অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক এবং সামাজিক অগ্রগতি সাধনে সক্ষম তখনই প্রকৃত স্বাধীনতা অজিত হয়। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বহু কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয় এবং খুব সহজে লাভ করা যায় না। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বহু রক্ত দিতে হয় । কারণ, শক্তিমদমত্ত শাসকেরা কখনোই পদানত জাতিকে স্বাধীনতা দান করে না; রক্তপাতের মাধ্যমেই তা অর্জন কতে হয়।

মন্তব্য: ‍

স্বাধীনতা মানুষের কাছে পরম আরধ্য হলেও স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করতে পারে খবু কম লোকেই। স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে যেমন নির্ভীক যোদ্ধা হয়ে অস্ত্র হাতে সংগ্রাম করতে হয়। তেমনি স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে কলম , কাস্তে হাতুড়ি নিয়ে অপেক্ষাকৃত কঠিন সংগ্রামে একতাবদ্ধভাবে দাড়াতে হবে।

অথবা

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন
স্বাধীনতা অর্জন করা কঠিন , স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিনতর।

মূলভাব: স্বাধীনতা জাতীয়জীবনের অমূল্য সম্পদ। স্বাধীন থাকার মর্যাদা ও গৌরব অতুলনীয়। স্বাধীনতাকে সমুজ্জ্বল রাখার জন্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাধনার। স্বাধীনতাকে গুণে ও গৌরবে সমৃদ্ধ করে যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে হয় বলে তার জন্যে নিরলস শ্রম দান করা আবশ্যক। সেদিক থেকে স্বাধীনতা অর্জনের কঠোর সাধনার চেয়ে তা রক্ষার জন্যে সাধনা কঠোরতর হওয়া অপরিহার্য।

সম্প্রসারিত ভাব: স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। আর মানুষ মাত্রই স্বাধীনতাপ্রিয়। এ প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক ইসমাইল হোসেন সিরাজীর উক্তিটি প্রণিধানযোগ্য, “আলোক ব্যতীত যেমন পৃথিবী জাগে না, স্বাধীনতা ব্যতীত তেমনি জাতি কখনও বাঁচতে পারে না।” -এই স্বাধীনতা অর্জন করা বড়ই কঠিন। পীড়িত, অত্যাচারিত জাতি স্বীয় মর্যাদাকে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্যে সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্তিলাভ করে থাকে। কিন্তু এ মুক্তি অর্জনই মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। একে সমুন্নত রাখাই মুখ্য উদ্দেশ্য। স্বাধীনতাকে রক্ষা করে তাকে ফলপ্রসূ করতে হলে প্রয়োজন হয়- জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত করে তার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বনির্ভরতা অর্জন। কিন্তু এ কাজ খুব সহজ নয়। বিভিন্ন জাতির স্বাধীনতার অভিজ্ঞতা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, পুনর্গঠন, উন্নয়ন ও বহিঃশত্রুর হাত থেকে একে রক্ষা করার জন্যে সদা প্রস্তুত থাকা একান্ত প্রয়োজন। কেননা তখন একদিকে থাকে পরাজিত শক্তি ও তাদের দেশীয় অনুচরদের জিঘাংসা ও মরণকামড়ের জ্বালা, অন্যদিকে স্বাধীনতার পক্ষের অভ্যন্তরীণ রেষারেষি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জীবনের উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতা অর্জন করা খুব সহজ কাজ নয়। আর এসব ক্ষেত্রে রয়েছে মানুষের নানাবিধ সমস্যা। অনেক সময় এ সমস্যাই সৃষ্টি করে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার। ফলে রাষ্ট্রীয় জীবনে দেখা দেয় হতাশা, কমে যায় কর্মোদ্দীপনা, সর্বোপরি জাতীয় উন্নতি মুখ থুবড়ে পড়ে। তখন স্বাধীনতার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মর্ম রক্ষা করার প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দেয়। তাই স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে দেশের আপামর জনসাধারণকে সচেষ্ট ও কর্তব্যপরায়ণ হয়ে মাঠে-ময়দানে, কল-কারখানায় অবিরাম কাজ করতে হবে। দেশকে শিল্প ও বাণিজ্যে উন্নত করে দেশের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে হবে। কৃষির উন্নতি বিধান করে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে। এভাবে কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ব্যর্থতার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এবং স্বাধীনতা লাভের পর পরাধীনের মত জীবন-যাপন না করে বলিষ্ঠ ও আত্মপ্রত্যয়ী-জাতি হিসেবে স্বাধীনতাকে অম্লান রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। তবেই অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব। নতুবা ঈপ্সিত স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়বে।

মন্তব্য: ‍স্বাধীনতা অর্জিত হয় রক্ত দিয়ে, তাই এ-স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।

বিঃদ্রঃ বাংলাদেশর সকল শিক্ষা বিষয়ের খবর এবং বাংলা ২য় ও ইংরেজি ২য় এবং সকল বিষয়ের তথ্য জানতে চোখ রাখুন  কৌণিক বার্তা ফেসবুক পেজে নিচে লিংক দেওয়া হলোঃ-


ভাবসস্প্রসারণের সম্পূর্ণ তালিকা

এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url