হরতাল বা ধর্মঘট - অনুচ্ছেদ | Strike

ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিবাদ করা হলো হরতাল। কোন গোষ্ঠী বা জাতি ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘিত হলে সেই ক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর বা জাতির ডাকে সকল কাজকর্ম বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানানোর নামই হচ্ছে হরতাল। গুজরাটি শব্দ হরতাল।

হরতাল

হরতাল বা ধর্মঘট - অনুচ্ছেদ | Strike
হরতাল

বিষয়ঃ অনুচ্ছেদ হরতাল

শ্রেণিঃ Class 5 6 7 8 9 10 SSC HSC

“হরতাল” গুজরাটি শব্দ। হরতাল এর ইংরেজি শব্দ Strike এর বাংলা আঘত করা, হরতাল বা ধর্মঘট। ধর্মঘট অর্থ কোনো দাবি আদায়ের লক্ষ্যে চরম আঘাত করার নাম। বাংলাদেশের রাজনৈতিক হরতাল নতুন শব্দ নয়। ব্রিটিশ শাসন থেকেই বাঙালি জাতি তাদের দাবি আদায়ের মূল অস্ত্র হিসেব হরতাল শব্দটি ব্যবহার করে আসছে। মূলত কোন গোষ্ঠী ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘিত হলে সেই ক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর ডাকে সকল কাজকর্ম বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানানোর নামই হচ্ছে হরতাল। আমরা হরতাল শব্দটি সম্পর্কে সকলেই পরিচিত। আমাদের ন্যায্য অধিকার পাওয়ার জন্য ব্রিটিশ শাসনমলে হরতাল করছে। বাংলাদেশে হরতাল শব্দটি আরও ব্যাপক অর্থ পেয়ে রাজনৈতিক দলের বৃহত্তর কর্মসূচির সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে গেছে। আমরার হরতালের কার্যকারিতা প্রমাণিত পাই বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলন চলার সময়। হরতাল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষের আন্দোলনের অন্যতম দিক ছিল এই হরতাল। সাধারণত হরতাল ডাকা দিলে  সুনির্দিষ্ট কাজকর্ম বন্ধ রেখে।

সাধারণত শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নাম ধর্মঘট। বাংলাদেশে ধর্মঘটের অনুরূপ কর্মসূচির নাম হরতাল। হরতালের সাথে রাজনীতির একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কোনো রাজনৈতিক ঘটনার প্রতিবাদে, কোনো ন্যায্যদাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করার নাম হরতাল। হরতালের সময় কাজকর্ম হয় না, জীবনযাত্রা হয় অচল। ধর্মঘটের শক্তি প্রবল। সুসংবদ্ধ ধর্মঘট সর্বত্রই সফল হয়। দেশের ধনিকশ্রেণি বা গণবিরোধী শাসকদের বিরুদ্ধে ধর্মঘটই শক্তিশালী অস্ত্র। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেক দেশেই উৎপাদনকারী কৃষিজীবী ও শ্রমিক সমাজ ধনী বা উচ্চশ্রেণি দ্বারা নিপীড়িত, নিগৃহীত ও লাঞ্ছিত হয়ে আসছে। বৈষম্যমূলক বণ্টনপ্রথার মূলে ধর্মঘট কুঠারাঘাত করে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর রদবদলে সমর্থ হয়। স্বৈরাচারী সরকারের অপসারণে হরতালের মাধ্যমে দেশের জনগণ তাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করে। ধর্মঘট বা হরতালের প্রতিকূল প্রভাব যদি জাতীয় জীবনে না পড়ত তাহলে বিনা প্রতিবাদে তাকে গ্রহণ করা যেত এবং আমাদের জীবন অনেক বেশি সার্থক হয়ে উঠত। তাই দলমত নির্বিশেষে সবারই জীবন ও জাতির স্বার্থে ধর্মঘটের মূল কারণ খুঁজে বের করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা উচিত।

আমরা বাংলাদেশের ইতিহাস পড়লে বুঝতে পারি হরতাল কি? বাঙালি জাতি তাদের মাতৃভাষা জন্য ১৯৫২ সালে হরতাল ডাকা হয়েছিল। সেই দিন হরতাল ডাকার জন্য সকল স্কুল, কলেজ, অফিস - আদালত এবং সকল কজকর্ম বন্ধ করা হয়েছিল। ব্রিটিশ শাসনের সময় ভারতবর্ষের জনগণের নিজেদের ন্যায্য অধিকার থেকে লঙ্ঘিত হওয়ার ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে এবং হরতাল ডাকা দিয়েছিল। বাঙালি জাতির ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘিত করায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হরতাল করা হয়। বাঙালি জাতি বা বাংলাদেশ নামে দেশটি স্বাধীন লাভে হরতালের এর গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছিল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হরতাল করে  দাবি আদায় করেছিলো বাঙালি জাতি।



অনুচ্ছেদ

অনুচ্ছেদ হলো কোন একটি মূল বক্তব্যকে সম্প্রসারিত করে লেখার কয়কেটি পরস্পর সম্পকিত বাক্যের সমষ্টিই অনুচ্ছেদ। কোন একটি নিদিষ্ট চিন্তা/ধারণা বা বিষয়কে কতগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বাক্যের সাহায্যে প্রকাশ করাই হলো “অনুচ্ছেদ লিখন”।


সবগুলো #

এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url