রচনাঃ সততা ও সত্যবাদিতা রচনা ৩০০ শব্দের / সততা ও সত্যবাদিতা রচনা pdf / JSC SCC HSC

চরিত্র (১৬ পয়েন্ট)

সততা মূলত একটি বিমূর্ত ধারণা। তবে এটি একটি কাঙ্ক্ষিত ও ইতিবাচক প্রতায়। সততা মূলত সৎ মানুষের সামগ্রিক জীবনাচরণেরই স্বরূপ। দেশ-কাল-পাত্রভেদে সভতার কোনো পার্থক্য নেই। তবে ধর্ম-সংস্কৃতি ও জাতিগত পার্থক্যে এ প্রত্যয়টির চেতনাগত কিছু পার্থক্য আছে বৈকি। রচনা সকল শ্রেণির জন্য দেওয়া হলো এসএসসি, এইচএসসি, জেডিএস, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেণিন জন্য সহজ ভাবে লেখা হয়েছে। ” রচনাঃ সততাসত্যবাদিতা রচনা ৩০০ শব্দের / সততাসত্যবাদিতা রচনা pdf / JSC SCC HSC

‘চরিত্র’

ভূমিকা


সততা একটি সর্বশ্রেষ্ঠ মানবীয় গুণ। মানুষের আমৃত্যু সাধনা সততার লালনে, সৎ থাকায়। সততার গুণ অর্জন ছাড়া মানুষের জীবন পশুত্বে পর্যবসিত হতে বাধ্য। তাই সততা ব্যক্তি-মানুষের জীবন-উৎকর্ষের জন্যে যেমন মহামূল্যবান তেমনি মানবসমাজের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। সততার চেতনাশূন্য সমাজ নরকতুল্য। মানুষের স্বাভাবিক জীবনবিকাশের জন্যে তা মোটেই সহায়ক নয়। তাই বাক্তিগত ও সামাজিক পর্যায়ের সর্বত্র সততার চর্চা করা সকলের কাম্য।

সত্যবাদিতা ও সততা কী

সততা মূলত একটি বিমূর্ত ধারণা। তবে এটি একটি কাঙ্ক্ষিত ও ইতিবাচক প্রতায়। সততা মূলত সৎ মানুষের সামগ্রিক জীবনাচরণেরই স্বরূপ। দেশ-কাল-পাত্রভেদে সভতার কোনো পার্থক্য নেই। তবে ধর্ম-সংস্কৃতি ও জাতিগত পার্থক্যে এ প্রত্যয়টির চেতনাগত কিছু পার্থক্য আছে বৈকি। প্রকৃতপক্ষে সততা হচ্ছে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের অপর নাম। কখনো ধর্ম সততার নির্ধারক হয়, কখনোবা সমাজের প্রচলিত ধারণা একে নির্দেশ করে। যেভাবেই হোক সততার একটি অভিন্ন স্বরূপ মানুষের মধ্যে বদ্ধমূল হয়েছে এবং সততার লক্ষণ যার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠে তাকেই মানুষ নির্দ্বিধায় সৎ বলে থাকেন। তবে সভড়া বিশেষ কোনো একটি গুণ নয়, এটি একটি সমন্বিত বিষয়। অর্থাৎ সকল প্রকার সুন্দর গুণের অনুশীলনেই মানুষ সৎ হয়ে উঠে।

সত্যবাদিতা ও সততার বৈশিষ্ট্য

সততা বলতে সৎ থাকার গুণকে বুঝানো হয়। সত্যের অনুসারী মানুষের সৎ থাকার প্রবণতার মধ্য দিয়ে সততার প্রকাশ ঘটে। অন্যায়, অবৈধ কাজ না করে ন্যায় ও সত্যের সপথে জীবন পরিচালনা করাই সততার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। জীবনকে সফল ও সার্থক করে তোলার প্রধান উপায় হলো সততা। সৎ চিন্তা ও সৎ কাজের মধ্য দিয়েই বিকাশ ঘটে সততার মত মহৎ গুণ। তাই আদিকাল থেক মানুষ সততার চর্চা করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিসমা কর আসছে। সততার গুণে সমৃদ্ধ মানুষ সমাজের আদর্শ মানুষ।

মানবজীবনে সততার প্রয়োজনীয়তা

মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। কিন্তু মানুষ জন্মমাত্রই এ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হয় না। তাকে সত্য-সুন্দর ও কল্যাণের সাধনায় মনুষ্যত্ব অর্জনের মাধ্যমে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। সততার সৌন্দর্যে যখন সে প্রোজ্জ্বল হয়ে উঠে তখনই সে হয়ে যায় আশরাফুল মাখলুকাত। আবার মানুষ যখন তার কুপ্রবৃত্তিকে দমন করতে ব্যর্থ হয়ে নিজেকে রিপুর দাসানুদাসে পরিণত করে তখন সে ইতর প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট হয়ে পড়ে। তখন তার দ্বারা মানবতা উপকৃত হয় না, সমাজ কল্যাণ ধারায় সিক্ত হন না। মানুষ তার মুখদর্শনে পুলকিত হয় না এবং ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয় সকলে। একজন সৎ মানুষ সকলের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় অভিষিক্ত হয়। বস্তুগত অভাব থাকলেও সে জীবনে কোনো দিনই অভাব-তাড়িত হয় না, কোনো দিনই তার জীবন থেমে যায় না। অন্যের সহমর্মিতা ও সহযোগিতায় তার জীবন সাবলীলতা পায়। সৎ মানুষকে সকলে অনুসরণ ও অনুকরণের যোগ্য বলে মানে। সততার মাধ্যমে একজন মানুষ নিজেকে সর্বস্থায়ী করে। তোলে। সত্যের আলো, কল্যাণের ফর্গশ্রী ও সুন্দরের প্রেরণায় সে নিজেকে অভিষিক্ত করে।

সমাজজীবনে সত্যবাদিতার প্রয়োজনীয়তা

সামাজিক অনুশাসন, ধর্মীয় মূল্যবোধ, আইন সবকিছুই সততার সংরক্ষক। সমাজ মানুষে বসবাসকেন্দ্রই শুধু নয় এটি মানুষকে দেয় নিরাপত্তা ও সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা। আর এসবই সামাজিক জীবনে উপস্থিতির সাথে সম্পর্কিত। সমাজে সততার মূল্য ও পরিচর্যা না থাকলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। হিংসা, অনাচারে সমাজ ছেয়ে যায়। হত্যা, খুন, রাহাজানি, ঘুষ, দুর্নীতি, জুলুমে সমাজ কলুষিত হয়। সমাজের মানুষ যদি সততার হয় তাহলে মানুষের সামাজিক জীবন সুখময় হতে বাধ্য। রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও সততার সাধনা কল্যাণ রাষ্ট্রের চেতনাকে সমুজ্জ্বল করে।

সত্যবাদিতা ও সততার স্বরূপ

সততা বিমূর্ত ধারণা হলেও এটি কোনো আপেক্ষিক বিষয় নয়। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সময় ও পরিস্থিতিতে সম্ভব পরিবর্তিত হয় না। এটি কোনো মুখে আওড়ানোর বিষয়ও নয়। কারণ এটি কোনো মন্ত্র বা দোয়া নয়। কর্ম ও আচরণের সংমিশ্রণে ৰাস্তবতা পায়। তবে চিন্তা-চেতনা ও মনোগত বিষয়টি উপেক্ষণীয় নয়। প্রকৃতপক্ষে মানুষের চিন্তা ও কর্মের যুগপৎ সৌন্দর্যেই De প্রকাশ পায়। একজন সৎ মানুষ কোনো কুচিন্তা করতে পারেন না, মানুষের অমফালের কথা ভাবতে পারেন না। তার আচরণে বিনা, ও শালীনতা প্রকাশ পায় । লোভ-লালসা, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তিকে সে নির্মোহভাবে এড়িয়ে চলে। সৎকর্ম সে লোক দেখানোর জন্যে কর সততা মুখের উচ্চারণে প্রমাণ হয় না। একজন মানুষ তখনই সৎ যখন সে অসৎ হবার পরিবেশেও সৎ থাকে। সে নিজের বিবেকের মাকে দায়ব্য। সমাজের কেউ দেখতে পায় না এমন স্থানেও সে অসৎ কর্ম করে না। পাপ ও অপরাধ তাকে স্পর্শ করতে পারে না। অকর্ম না করা মানেই সততা না। প্রকৃতপক্ষে অসততাকে সর্বতোভাবে প্রতিরোধ করা।

সততা অর্জনের সময়

সত্যবাদিতা ও সততা জীবনের কোনো আংশিক বা বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। এটি জীবনের কোনো বিশেষ সময়ের প্রয়োজনত না। মূলত এটি জীবনব্যাপী একটি সাধনা। মুহূর্তের লোভে বা ভুলে মানুষ স্খলনের খাদে নিপতিত হতে পারে। মূলত অমৃততাকে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সজ্ঞানে এড়িয়ে চলতে হয়। বলাবাহুল্য, সততাকে অক্ষুণ্ণ ও অব্যাহত রাখা একটি কঠিন সাধনার বিষয়। এ সাধনার কোনো বিরতি নেই। তবে সভতার চেতনাটি মানুষের মনে গেঁথে দিতে হয় বাল্যকালেই। সেজন্য পরিবারই সততা রপ্ত করার মূল কেন্দ্র। পরিবারের সদস্যদের জীবনে সততা ও পবিত্রতার অনুশীলন থাকলে শিশুমনেই একটি পবিত্র ও নীতিবৃক্ষ বিকশিত হতে থাকে। তবে ছাত্রজীবন, কর্মজীবন ও সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৎ মানুষদের অনুসরণে সততার চেতনাকে জাগ্রত রাখতে হবে।

সততার সুফল

সত্যবাদিতা সুফল শত ধারায় বিকশিত। জীবনকে সুন্দর, সফল ও সার্থক করে তুলতে হলে সৎ থাকার অভ্যাস অর্জন করতে হয়। সৎ গুণ সম্পন্ন মানুষ কখনও অসৎ কিংবা মন্দকাজে লিপ্ত থাকতে পারে না। সৎলোক মাত্রই চরিত্রবান ও মহৎ হয়ে থাকে। সৎ লোক সমাজে সবার বিশ্বাসভাজন হয়ে থাকে। সততা মানুষকে নৈতিক শক্তিতে বলীয়ান করে থাকে। সৎ ব্যক্তি কখনও অন্যায় ও অসত্যর কাছে মাথানত করে না। মানব জীবনে তাই সততার গুরুত্ব অপরিসীম।

উপসংহার

আজকের দিনে সৎ-অসৎ, সুন্দর-অসুন্দর, ভালো-মন্দ প্রভৃতির পার্থক্য যেন একাকার হয়ে গেছে। একজন সৎ মানুষ সমাজে দুর্লভ এবং বলাবাহুল্য, যে সৎ মানুষ সে সমাজে বোকা ও অচল বলেই পরিহাসের পাত্র হয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও সততার নীতিকে উপেক্ষা করা যাবে না। সততা সুন্দর, সততা মহান। আমাদের চরিত্রকে মহিমান্বিত করার জন্য, জীবনকে সফলতায় ভরে দেয়ার জন্য সততার চর্চা অপরিহার্য। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের সততার পরিচয় দেয়া একান্ত দরকার। আর এই জন্য ছেলেবেলা থেকেই আমাদের সৎ থাকার অভ্যাস গঠন করতে হব। সততার অনুশীলন করতে হবে। আজকের সর্বময় অবক্ষয়ে ধ্বংসোন্মুখ সমাজকে কল্যাণকামী করে তোলার জন্য সততার চেতনাটি সকলের মনে প্রজ্বলিত রাখতে হবে। সততার সাধনাকে আমাদের জীবনব্রত হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।


কৌণিক বার্তা.কম কে সাহায্য করোঃ
রচনাটি সম্পূর্ণ করার জন্য কিছু পয়েন্ট প্রয়োজন। আপনি চাইলে কিছু পয়েন্ট দিয়ে সাহায্য করতে পারবেন। নতুন রচনা লিখে দিতে চাইলে দিতে পারবেন, ধন্যবাদ।


বাংলা রচনার সম্পূর্ণ তালিকা


আপনি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন 200 সেকেন্ড পর


বাংলা প্রবন্ধ রচনা তালিকা


সবগুলো #

এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url