বাংলা রচনা : ইন্টারনেট ও বর্তমান বাংলাদেশ | ইন্টারনেট ও বাংলাদেশ | ইন্টারনেট ও আজকের বাংলাদেশ রচনা | Internet O Bortoman Bangladesh Rochona

ইন্টারনেট তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী বিপ্লব সাধন করেছে । ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পৃথিবীর এক প্রান্তের কম্পিউটার থেকে অপর প্রান্তের আর কম্পিউটারে ছবিসহ যাবতীয় তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছে । বর্তামন ইন্টারনেট একটি বিশাল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ।

ইন্টারনেট ও বর্তমান বাংলাদেশ

বাংলা রচনা : ইন্টারনেট ও বর্তমান বাংলাদেশ | ইন্টারনেট ও বাংলাদেশ | ইন্টারনেট ও আজকের বাংলাদেশ রচনা | Internet O Bortoman Bangladesh Rochona
ইন্টারনেট ও আজকের বাংলাদেশ

বাংলাদেশ বর্তমান ইন্টারনেট ব্যবহার কারি সংখ্যা অনেক এবং দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব যেমন ইন্টারনেট ব্যবহার সংখ্যা বাড়ছে ঠিক বাংলাদেশ ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সংখ্যা বাড়ছে। ইন্টারনেট ও বর্তমান বাংলাদেশ রচনা সকল শ্রেণি জন্য। শ্রেণি ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ এদের জন্য সহজ ও সুন্দর ভাবে ইন্টারনেট ও আজকের বাংলাদেশ রচনা লেখা হয়েছে।

ভূমিকা

বাংলাদেশ ও বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। বর্তমান বিশ্বে যােগাযােগের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নাম যেমন ইন্টারনেট ঠিক বংলাদেশও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ইন্টারনেট। ইন্টারনেট তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী বিপ্লব সাধন করেছে । ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পৃথিবীর এক প্রান্তের কম্পিউটার থেকে অপর প্রান্তের আর কম্পিউটারে ছবিসহ যাবতীয় তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছে । বর্তামন ইন্টারনেট একটি বিশাল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম । যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সকল মানুষের জীবনে অনেক সহজ করে তুলেছে। আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষজনিত আশীর্বাদের অন্যতম সুবিধা হলো ইন্টারনেট (Internet) ব্যবস্থা। ইন্টারনেট তথ্য যোগাযোগের একটি আধুনিকতম বিশ্বায়ন ব্যবস্থা। যা সারা দুনিয়ার মানুষকে একটি যোগাযোগ জাল (NET)-এ আবদ্ধ করেছে। সত্যিকার অর্থেই ইন্টারনেট একটি বিস্ময়কর ও বিপ্লবাত্মক উদ্ভাবন।

ইন্টারনেটের আবিষ্কার

প্রথম ইন্টারনেট এর দেখে হয়েছে ১৯৬০ সালে আরপনেট নামে পরিচিত ছিল। মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা  অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস বা আরপা (ARPA) পরীক্ষামূলক ভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেন। এই চালুকৃত ইন্টারনেট আগে আরপানেট (ARPANET) নামে পরিচিত ছিল। পরে তা আরপানেট থেকে ইন্টারনেট করা হয়েছে। বিশ্বে সবার জন ইন্টারনেট আইএসপি দ্বারা ব্যবহার জন উন্মুক্ত করা হয় ১৯৮৯ সালে। ১৯৯০ এর মাঝামাঝি থেকে ১৯৯০ এর পরবর্তি সময়ের দিকে পশ্চিমাবিশ্বে ইন্টারনেট ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হতে থাকে। ইন্টারনেট জনক হচ্ছে “ভিনটন জি কার্ফ”। ১৯৬৯ সালের ২৯ অক্টোবর আরপানেট প্রথম ইন্টারনেটে একটি নোড থেকে অন্য একটি নোড এ ম্যাসেজ পাঠায়।

বাংলাদেশে ইন্টারনেট 

বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের যে জয়জয়কার তার স্রোত থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন নয়। ১৯৯৩ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ইন্টারনেট ব্যবহার চালু হয়। এরপর দ্রুত এটি সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ইতোমধ্যে টিএন্ডটি বোর্ড পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ভি-স্যাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায় থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যেকটি জেলাকে ইন্টারনেট ব্যবস্থায় সংযুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে এবং ইতোমধ্যেই অধিকাংশ জেলা এ সুবিধার আওতায় এসেছে।

বাংলাদেশ বর্তামনে ইন্টারনেট ব্যবহার

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে ইন্টারনেট এর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বিষ্ময়কর হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ইন্টারনেট ও তথ্য প্রযুক্তিতে জনগণের প্রবেশের অধিকার এবং ব্যবহার বৃদ্ধি লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি (১০০ মিলিয়ন) বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি এবং মোট জনসংখ্যার ৬২% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ৪ জি নেটওয়ার্ক পরিষেবা প্রদান শুরু করে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ৫ জি নেটওয়ার্ক পরিষেবা প্রদান বা চালু করার কথা আছে বিভিন্ন সিম অপারেটর বলেছেন। ২০২০ সালের মে পর্যন্ত বাংলাদেশে ইন্টারনেট মূলত ২ টি সাবমেরিন কেবল সিমিউ-৪ এবং সিমিউ-৫ দ্বারা বাংলাদেশে সরবরাহ করা হয়। যার ব্যান্ডউইথ সরবরাহ সক্ষমতা যথাক্রমে ৩০০ জিবিপিএস ও ১৮০০ জিবিপিএস। ২০০০ সালের শুরুতে ইন্টারনেটের গ্রাহক ছিল প্রায় ৬০,০০০। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তির মহাসড়ক সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হয়। এতে দেশে ইন্টারনেটের গতি অনেক বেড়ে যায়। ২০১৭ সাল নাগাদ সাবমেরিন ক্যাবলের দ্বিতীয় মহাসড়কে যুক্ত হবে বাংলাদেশ। বর্তমানে ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১.৫ কোটি। সরকার ইন্টারনেটের প্রসারে অনেক কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ইন্টারনেট বিবর্তন

বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে অফলাইন ই-মেইল-এর মাধ্যমে প্রথম সীমিত আকারে ইন্টারনেটের ব্যবহার শুরু হয়। বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয় - ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে ইন্টারনেট সবার জন্য উন্মুক্ত হয় - ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৬ সালে দেশে প্রথম ইন্টারনেটের জন্য ভিস্যাট স্থাপন করা হয় এবং আই.এস.এন নামক একটি আইএসপি-র মাধ্যমে অনলাইন ইন্টারনেট সংযোগের বিস্তৃতি ঘটতে শুরু করে। শুরুতে এই আইএসপি গুলো ছিল শুধু বিটিটিবি-ই সরকারি মালিকানাধীন। বর্তমানে সরকারের টেলিযোগাযোগ আইনের আওতায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন(বিটিআরসি) এই আইএসপি সমুহ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করছেন।

ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ইন্টারনেট

বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। দেশের সরকারি অফিস আদালত, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সেবা সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সেবা এখন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। ই-গর্ভনেন্স এবং ই-বিজনেসের ফলে সরকারি কাজ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক সহজ হয়ে এসেছে। অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা আর্থিক কর্মকান্ডকে অনেক বেশি গতি দান করেছে। তবে একথা সত্য যে, উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছিয়ে আছে।

বাংলাদেশে শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার

বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষার আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে শিক্ষাভিত্তিক অনেক ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে, প্রতিনিয়ত হচ্ছে ফলে সাইটগুলো ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হলে প্রথমে একটি কম্পিউটার বা স্মার্ট ডিভাইস দরকার। কোনো শিক্ষার্থী পড়ালেখায় কোনো একটা বিষয় বুঝতে না পারলে সে যদি ইন্টারনেটে সেটি অনুসন্ধান করে সঙ্গে সঙ্গেই সেটা পেয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে, কোন ছাত্র যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে শিখতে চায়, জানতে চায় সে ইন্টারনেটে তা খুঁজে নিতে পারে। এ জন্য বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের পাশাপাশি অত্যন্ত দক্ষ সার্চ ইঞ্জিনও তথ্য প্রযুক্তিবিদরা তৈরি করেছেন। বর্তমানে সার্জ ইঞ্জিন গুলো ব্যবহার করার খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। নিজে মাতৃভাষা মাঝে আপনি যে কোন কিছু সার্চ করতে পারবেন। তবে এ সার্চ ইঞ্জিনগুলো ব্যবহার করার জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। গণিতের অত্যন্ত চমৎকার কিছু সাইট রয়েছে, যেখানে গণিতের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাতে-কলমে দেখার জন্যও সাইট রয়েছে।

বাংলাদেশে ইন্টারনেটের বাণিজ্যিকীকরণ 

ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে বিশাল বাণিজ্যিক বলয় গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে এক ডজনেরও অধিক ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সেবা প্রদান করছে। গড়ে উঠেছে 'সাইবার কাফে' নামক তথ্য বিনোদন কেন্দ্র। যাদের নিজস্ব ইন্টারনেট সংযোগ নেই তারা বিভিন্ন তথ্য যোগাযোগ করে এসব কাফেতে বসে। অপরদিকে সাধারণ ফোন-ফ্যাক্সের দোকান থেকেও ই-মেইলসহ নেটফোন সার্ভিস প্রদান করা হচ্ছে। বিভিন্ন সেবা ও সুযোগ নিয়ে ইন্টারনেটকে ঘিরে কর্মসংস্থানসহ যেসব বাণিজ্যিক পরিমণ্ডল পড়ে উঠেছে তার থেকে সরকারও কোটি কোটি টাকা রাজস্ব লাভ করছে।

উপসংহার

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিই বর্তমান বাংলাদেশে সকল প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের মূল চালিকাশক্তি। এক্ষেত্রে যারা যতো বেশি অগ্রগামী, তারা ততো উন্নত। ইন্টারনেট এখন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি স্তরকে জয় করে মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ইন্টারনেট শুধু বাংলাদেশ না পূর বিশ্ব ব্যবহার করছে। প্রতি দেশ এক অপরের সাথে যুক্ত আছে। এবং পৃথিবীর এক প্রান্তের কম্পিউটার থেকে অপর প্রান্তের আর কম্পিউটারে ছবিসহ যাবতীয় তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছে । বর্তামন ইন্টারনেট একটি বিশাল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ।


বাংলা প্রবন্ধ রচনা তালিকা


সবগুলো #

এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url